• ১১ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Second Part

নিবন্ধ

গল্প হলেও সত্যি কি? (দ্বিতীয় পর্ব )

প্রতিদিনের মতোই আজও তন্ময় এসে বসেছে নিজের চেয়ারে আর দেখে চলেছে একের পর এক ফাইল, তার ভিতরে একই সাথে অস্বস্তি আর রাগের অনুভূতি হচ্ছে।অস্বস্তি এটা ভেবে যে সে কিছুতেই কোনো সন্দেহভাজন ধরতেই পারছেনা আর রাগ এটা ভেবে এই শ্রেয়ার আগে তার মাথায় এই গোটা এক সপ্তাহ রাত ৮টা -ভোর ৫টা কারফিউ জারি রাখার কথা। মেয়েটা এই রাতের অন্ধকারে ফাঁকা রাস্তায় নিজেরই লোক সাজিয়ে রেখেছে চারিদিকে। অপরাধী শিকার দেখে যদি লোভে পরে এগিয়ে আসে তো কিস্তিমাত।এমনসময় প্রায় হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে এসে অমিত বাবু বললেন, ম্যাম, কাল রাত থেকে সুবীর বাবুকে পাওয়া যাচ্ছিলোনা, আজ সকালে মনিস্ট্রির সামনে ওনার জামা কাপড় আর আধ খাওয়া শরীর পাওয়া গেছে।কথা বলতে গিয়ে অমিত বাবু যেন হাপিয়ে উঠছেন, ভয় তার চোখে মুখে স্পষ্ট। ম্যাম এটা কোনো মানুষের কাজ হতেই পারেনা, এটা কোনো না কোনো জন্তুর কাজ।শ্রেয়া: জন্তু? এই শহরের মাঝে? কি করে আসবে? আর আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা কি বলছে?অমিত: ম্যাম কোনো সিসিটিভিতে কিছু ধরা পড়েনি, শুধু দেখা যাচ্ছে সুধীর একটু এগিয়ে গেলো সামনে একটা কফি সপের দিকে, তারপর হটাৎ ওর চিৎকার, ব্যাস, তারপর আর কোনো ফুটেজ নেই ম্যাম।শ্রেয়া: কোনো সিরিয়াল কিলার? কিন্তু সে মানুষের মাংস কেন খাবে?তন্ময় এবার বলে উঠলো, খেতেই পারে, হতে পারে সে ক্যানিব্যাল, বা হতে পারে তার কোনো পোষা জন্তু আছে যে মানুষের মাংস খায় রাতের অন্ধকারে।শ্রেয়া: মানে স্যার আপনি বলছেন আমাদের শহরে নরখাদক ঘুরে বেড়াচ্ছে?তন্ময়: শুধু নড়খাদক বলিনি শ্রেয়া, কোনো মানুষের পোষা হিংস্র জন্তুও হতে পারে, তুমি বোধহয় পুরোটা শুনলেনা, এভাবে কিন্তু নিজের জায়গা বেশিদিন ধরে রাখা চাপ।শ্রেয়া আর কথা বাড়ালোনা তন্ময়ের সাথে, সে জানে তন্ময় মেনেই নিতে পারেনা তার জুনিয়র তাকে লিড করছে এই কেসে, আর তাই মুহূর্তে মুহূর্তে তাকে ক্ষত বিক্ষত করে কথার বানে।তন্ময় আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়লো ক্যাফেটেরিয়ার উদ্দেশ্যে, আজ সে ঠিক করে নিয়েছে গার্গীকে সে প্রপোজ করবে। একমাত্র গার্গীই পারে তাকে ভালোবাসতে আর ভালো রাখতে।শ্রেয়া বেরিয়ে পড়লো নিজের তদন্তের খোঁজে, সে তন্ময়কে বেরিয়ে যেতে দেখে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো, এই লোকটা থাকলে তার তদন্তের কোনো কাজই করা সম্ভব হবেনা। শ্রেয়া সুমন্তকে বললো, জিপ বের করো, ঘটনাস্থলে যাওয়া দরকার আগে।প্রায় ২০ মিনিট পর মনিস্ট্রির সামনে এসে থামলো জিপ, শ্রেয়া নেমে এলো, বডি নিয়ে যাওয়া হয়েছে পোস্টমর্টেম করতে। শ্রেয়া চারিদিক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে চলেছে, এগিয়ে যাচ্ছে সামনের সেই কফিসপের দিকে। নাহ খুনি যেন কোনো প্রমান ছেড়েই রাখেনি। এতো সুন্দরভাবে গুছিয়ে ক্রাইম কি একজনের পক্ষে সম্ভব?সুমন্ত: ম্যাম ইনি কিছু বলতে চান।শ্রেয়া নিজের খেয়াল থেকে বেরিয়ে এলো, তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন বেশ বয়স্ক লোক এই ঠান্ডায় কেঁপে চলেছেন, শ্রেয়া, কিছু দেখেছেন?লোকটা ভয়ে কিছু বলতে পারছেন না, শুধু পকেট থেকে বের করে দিলেন একটা কানের দুল আর কাপা স্বরে বলে উঠলো, কাল রাতে ওই পুলিশ অফিসারকে......নাহ আর পারলোনা লোকটা, বোধহয় ওই ভয়ানক দৃশ্যটা মনে পরে গেলো, শ্রেয়া , সুমন্ত এনাকে নজর রেখো, আর আপনি আমার অর্ডার ছাড়া এই জায়গা ছাড়বেন না।শ্রেয়া এবার কানের দুলটা আরো ভালো করে দেখলো, চোখের মুখে একটা অন্যরকম যেন ভয়ের আভাস স্পষ্ট, তাহলে কি স্যার যেটা বললেন সেটাই ঠিক?তন্ময়ের অনেক অনুরোধে শেষমেষ নিজের কাজ শেষ করে ক্যাফেটেরিয়ায় এসেছে আজ গার্গী, কিন্তু তার মন যেন এখানে নেই। তন্ময় অবশ্য প্রতিদিনের মতোই গার্গীকে নিজের মনের কথা, ভালোবাসার কথা বলেই চলেছে, তবে একটা সময়ের পর তন্ময়ের মনে হলো সে যেন কেবলই দেয়ালের সাথে কথা বলে যাচ্ছে কারণ গার্গী তো পাত্তাই দিচ্ছেনা তার মনের অবস্থাকে।তন্ময়: গার্গী তোমাকে আজকে কিরকম আনমনা মনে হচ্ছে ! সব ঠিক আছে তো ?গার্গী: কি?তন্ময়: তুমি ঠিক আছো?গার্গী: ঠিক না থাকার কি আছে?তন্ময়: তাহলে এইরকম লাগছে কেনো তোমায় ??গার্গী: কিরকম লাগছে?তন্ময়: পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেওয়া এত সহজ নয় ম্যাম। আপনি কিছু একটা লুকাচ্ছেন মিস ডক্টর।গার্গী: এই পুলিশগিরি বাইরে করবে আমার সাথে করতে এসো না, আর তাছাড়াও আমার অনেক কাজ আছে তন্ময়, তোমার জন্য চেম্বার ছেড়ে এসেছি।তন্ময়: আহা রেগে যাও কেন, তুমি ছাড়া আর কে আছে বলো যার কাছে একটু সময় চাইতে পারি।গার্গী: দেখো তন্ময়, তোমায় আমি অবশ্যই পছন্দ করি, তুমি তোমার বাবা মা, ভাই বোন, তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড সবার ব্যাপারে নিজেই বলেছো কিন্তু আমায় জিজ্ঞেস করেছো কোনোদিনও আমার পরিবারে কে থাকে? আমি কিভাবে বড়ো হয়েছি? আমায় কি কি সহ্য করতে হয়েছে? তন্ময় তুমি বলো তুমি আমায় ভালোবাসো অথচ তুমি তোমার ভালোবাসার কোনো খবর রাখো না উল্টে তুমি এমন ব্যবহার করো যেন মনে হয় চেম্বারের বাইরেও আমি কারোর কাউন্সেলিং করছি।তন্ময়: সরি গার্গী, আমি এর আগে কখনো প্রেম করিনি, তাই আমি অনেক ভুল করেছি, কিন্তু বিশ্বাস করো, আমি তোমায় ভালোবাসি। আজ তুমি বলো তোমার পরিবারের ব্যাপারে, তোমায় বিয়ে করতে হলে তো তাদেরকে আগে চিনতে হবে, তবে না গিয়ে বলতে পারবো আমি আপনার মেয়েকে ভালোবাসি, ওকে নিজের করতে চাই।গার্গী: আমার বাবা মা কেও নেই, আজ থেকে ৫ বছর আগে একটা এক্সিডেন্টে দুজনেই....!তন্ময়: সো সরি, তাহলে তোমার পরিবার?গার্গী: আমার পরিবার একজনকে নিয়েই আমার বোন। আর আমার বোন হলো শ্রেয়া, ইন্সপেক্টর শ্রেয়া, যাকে তুমি একদমই সহ্য করতে পারোনা।তন্ময় চমকে গেলো এই কথাটা শুনে, শ্রেয়া তোমার বোন?গার্গী: আজ্ঞে হ্যাঁ, ও আমারই বোন, যতবার তোমায় বলতে গেছি তুমি কথা ঘুরিয়ে দিয়েছো। এবার বলো, শ্রেয়ার দিদির সাথে প্রেম করবে? ও ছাড়া কিন্তু আমার কেও নেই, আমি ওর কেও নেই তাই আমরা কিন্তু যেখানেই থাকবো একসাথে থাকবো। তন্ময়: আজ থেকে আছে তো, আমি আছি তোমাদের দুজনের জন্য আর তোমরা দুজন আমার জন্য।গার্গী: সত্যি বলছো তন্ময়?তন্ময়: সত্যি সত্যি সত্যি, তিন সত্যি। এবার তো একটু হাসুন ম্যাম, আপনার ওই হাসি দেখার জন্য যে আমি প্রাণও দিতে পারি। গার্গী: থাক অনেক হয়েছে, এবার যাও নিজের কাজে আর আমাকেও যেতে দাও।তন্ময়: গার্গী, তুমি আমায় যতটা খারাপ ভাবো আমি কিন্তু ততটা নয়।গার্গী: তুমি খারাপ মানুষ নয় তন্ময়, কিন্তু তোমার ছোটবেলা কেটেছে একাকিত্বে, আর তাই তুমি চাইলেও নিজের আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব বদলাতে পারোনা। আর এটা নিয়ে আবার নিজেই কষ্ট পাও। তুমি মানুষ ভালো শুধু নিজেকে চিনতে পারোনা।তন্ময়: তুমি আছো তো আমায় চেনানোর জন্য। থাকবে তো এভাবেই?গার্গী: ঠিক থাকবো। এবার বরং আসি, নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।তন্ময়: আচ্ছা বেশ আর আটকাবো না।এই বলে গার্গী উঠে দাঁড়ালো এবং রেস্টুরে্নট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে এগিয়ে গেলো, এরই মাঝে হটাৎ গার্গী দাঁড়িয়ে পড়লো আর বললো, তন্ময়, সাবধানে থেকো, আমি তোমায় ভালোবাসি, পারলে নিজেকে এবং শ্রেয়াকে এই কেস থেকে দূরে নিয়ে যেও, মনে করো এটাই আমার তোমার থেকে আবদার।তন্ময়: কিন্তু, এই কেসটা শ্রেয়ার জন্য খুব জরুরী।গার্গী: কারোর প্রাণের থেকে বড়ো কিছু হতে পারেনা তন্ময়।এই বলে গার্গী বেরিয়ে গেলো। গার্গী র এইরকম আচরণ তন্ময়কে বেশ অবাক করে তুললো। যে মেয়ে সবসময হাসি খুশি থাকে, যে মেয়ে তার হাসির কারণ, যে তাকে সবসময় মোটিভেট করেছে এই তদন্তে সেই কিনা আজকে এইরকম ভাবে কেস ছেড়ে দিতে বলছে ? তন্ময় ভাবলো, কি হলো, আমাকে সরিয়ে নাহয় তাও বুঝলাম নিজের বোনকে সুযোগ করে দিতে চায় কিন্তু নিজের বোনকেও সরে যেতে বলছে ?? কেনো জানিনা মনে হচ্ছে ও কিছু বড়ো একটা লুকিয়ে ফেলছে।এমন সময় তন্ময়ের ফোন টা বেজে উঠলো, তন্ময় দেখলো স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে মৃদুলের নাম। এই মৃদুল হলো তন্ময়ের অতি বিশ্বস্ত ইনফরমার, পৃথিবীতে এমন কোনো জায়গা নেই যেখান থেকে এই ছেলেটা খবর বের করতে পারেনা।আজ থেকে পাঁচ বছর আগের কথা, তখন এই মৃদুল ছিল কুখ্যাত মাফিয়া আবরারের ডানহাত। বহু চেষ্টা করেও পুলিশ আবরারকে ছুঁতে পর্যন্ত পারেনি। অবশেষে কেসটা এলো তন্ময়ের হাতে। তন্ময়ও প্রায় হাল ছেড়েই দিয়েছিলো ঠিক এমন সময়ে সামনে উপস্থিত হলো মৃদুল।দিনটা ছিল এক বর্ষার, মৃদুল পুরোই ভিজে গেছে আর হাঁপাচ্ছে। তন্ময় ওকে শান্ত করে জল দেয় খেতে। তারপর মৃদুল ধীরে ধীরে সব তথ্য দেয় আবরারের আর মৃদুলের বিশ্বাসঘাতকতাই আবরারকে ধরিয়ে দেয়।আবরার ধরা পড়ার পর অবশ্য তন্ময় জানতে চেয়েছিলো কেন সে নিজের মালিকের সাথে এইরকম করলো, উত্তরে সে বলেছিলো আবরারের স্ত্রীকে সে ভালোবাসতো আর আবরার প্রতিদিন প্রতিরাত মেয়েটার উপর অত্যাচার করে বেড়াতো তাই আর সহ্য না করতে পেরে শেষমেষ সে এই সিদ্ধান্তই নেয়। এখন অবশ্য দুজনে একসাথে সুখেই আছে। মৃদুল নিজের ব্যবসাও করছে আর সাথে তন্ময়ের খবরি সে।তন্ময় ফোনটা ধরতেই মৃদুল বলে উঠলো,স্যার একটা খবর আছে!তন্ময়: কি ?মৃদুল:আজ থেকে ২ বছর আগে রানিগঞ্জে এইরকম মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল স্যার।তন্ময়: কিন্তু সেরকম তো কোনো রিপোর্ট ফাইল হয়নি!মৃদুল: হবে কিভাবে ? কারণ যারা নিখোঁজ হয়েছিল তারা সবাই গ্যাংস্টার ছিল, একটা সময় প্রায় ৫ টা গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য লড়াই করছিল কিন্তু হটাৎ একটা গোষ্ঠী ফুলে ফেঁপে ওঠে আর আর বাকি গোষ্ঠী গুলোর লোকজন যেনো ভ্যানিশ হয়ে যায় পুরো, কেও খুঁজে পায়নি তাদের।তন্ময়: সেটাতো নিজেদের মধ্যে লড়াইতে বাকিরা মারাও যেতে পারে...মৃদুল: স্যার লোক গুলো ঠিক এইভাবেই ভ্যানিশ হতো, শুধুই রক্ত আর হাড় পাওয়া যেত মাঝে মাঝে, মাঝে মাঝে সেটাও না। পুলিশ রিপোর্ট ফাইল হয়নি কারণ ওদের পরিবারের লোকেরা ভয় পেয়েছিলো।তন্ময়: আচ্ছা যে গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত টিকে গিয়েছিল তাদের নেতার নাম কি ?মৃদুল: ওয়াসিম ! কিন্তু স্যার ওয়াসিমও বেচেঁ নেই।তন্ময়:সে কি মারা গেলো কিভাবে ?মৃদুল: ওইভাবেই, একদিন ওরও রক্ত আর হাড় পাওয়া যায়। তবে এই কেস তার ইনভেস্টিগেশন করেছিল শ্রেয়া ম্যাম !তন্ময় : কি ?মৃদুল: ইয়েস স্যার! আর শেষ পর্যন্ত রণজিৎ ধরা পড়ে ম্যামের হাতে, আর জানা যায় যে এই রণজিৎ নিজে সর্বেসর্বা হওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের সমস্ত শত্রুদের মেরে কুকুরকে খাইয়ে দিত।তন্ময়: এই রণজিৎ কোথায় এখন ?মৃদুল: যেদিন এর কেস কোর্টে ওঠে সেদিন কোর্টে যাওয়ার রাস্তায় রণজিৎ সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে আর পুলিশ এনকাউন্টার করে দেয়।তন্ময়: আচ্ছা রঞ্জিতের ডেড বডির কি হয়েছিল?মৃদুল: রঞ্জিতের কোনো ফ্যামিলি ছিলনা তাই পুলিশ ওর সৎকার করেছিল।তন্ময়: কুকুর গুলোর কি হয়েছিল?মৃদুল: পুলিশ, কুকুর গুলোকে বন বিভাগের কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছিল।তন্ময়: সব কিছুই যে শেষ হয়ে বসে। ক্রিমিনাল বেচেঁ নাই। মরণাস্ত্র মানে কুকুর গুলোর পক্ষে সম্ভব নয় তাহলে এই নতুন কিলার আমদানি হলো কিভাবে ?মৃদুল: আপাতত এইটুকুই খবর পেয়েছি স্যার।তন্ময়: আচ্ছা একটা কাজ করো, আপাতত একজনের উপর নজর রাখতে হবে। ১-২ দিনেই কাজ হয়ে যাবে মনে হয়।মৃদুল: কে স্যার?তন্ময়: গার্গী চৌধুরীক্রমশ...... (পরের পর্বে)লেখকঃ সায়ন্তন গোস্বামী। (Sayantan Goswami)

এপ্রিল ২০, ২০২৫
নিবন্ধ

ফারাও এর দেশ ঘুরে... (ভ্রমণ কাহিনী) দ্বিতীয় পর্ব

আমাদের মিশর সফর কায়রো থেকে শুরু হয়ে কায়রোতেই শেষ হবে। আর আজ সেই দিন যে দিন আমরা বিশ্বের প্রাচীন বিস্ময়ের সামনে দাঁড়াব। আজ আমাদের পিরামিড দেখার দিন। গাড়ি করে রওনা দিলাম চরম আগ্রহ নিয়ে।আমাদের প্রথম গন্তব্য সাক্কারা। সাক্কারা হল মিশরের প্রাচীনতম Royal Necropolis বা রাজধানী। সাক্কারা তে প্রাচীন কবরস্থানও দেখা যায়। এই অঞ্চলের সব পিরামিড বা tomb গুলির সময়কাল প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্ব। অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৫০১৯ বছর আগেকার। এই এত বছরের হিসেবটা চট করে আমাদের মাথায় আসেনা। আমাদের মত সাধারন মাপের মানুষ জন বুঝতেই পারেনা যে, এটা ঠিক কত বছর আগে হতে পারে, আর তখন কার সাথে আজকের পার্থক্যটাই বা কতটা সেটাও বুঝতে বেশ অসুবিধা হয়। তবে সেই সব স্থাপত্যের সামনে গিয়ে বেশি কিছু বোঝার থাকেনা। শুধু বিস্ময়ে হকবাক হয়ে যাওয়া ছাড়া। তাদের অস্তিত্ব্যের সামনে নিজেকে খানিকটা হাস্যকর মনে হয়।কায়রো শহর থেকে একটু দূরে সাক্কারা। Old Kingdom বা পুরনো রাজবংশের মিশরীয় রাজারা বা Pharaoh রা বিভিন্ন ভাবে পিরামিড তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। কেউ ধাপে ধাপে করে, কেউ ৪৫ ডিগ্রী কোণ করে। কোনটি আবার শুধু মাত্র ঢিবি হয়ে রয়ে গেছে। কোনটি আবার বানানোর পর ভেঙ্গে পরেছে যাদের আজকাল বলা হয় Collapsed Pyramid। সাক্কারা চত্তরে কাছে দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সেই সব বিভিন্ন রকমের পিরামিড এরই নমুনা।পিরামিড কথাটি এসেছে পুরনো মিশরীয় শব্দ pey-raa-mid থেকে। যার অর্থ স্বর্গে যাবার সিঁড়ি বা ভগবান রা এর কাছে যাবার সিঁড়ি। এই রা দেবতা হলেন মিশরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেবতা, যিনি অন্য অর্থে সূর্য দেবতা। প্রাচীন মিশরীয়রা সূর্য দেব কে পূজা করতেন, কারণ তারাও মনে করতেন যে, সর্ব শক্তির আধার, প্রাণের আধার। পৃথিবীর সব প্রান্তেই, সব প্রাচীন সভ্যতাতে সূর্য দেবতার পূজা দেখে অবাক হতে হয়। দক্ষিণ আমেরিকার মায়া সভ্যতায় Kinich Ahau, মিশরীয় দের Raa, গ্রীকদের Apollo Helious বা ভারতীয়দের সূর্যদেব। এর থেকেই বিশ্বাস জন্মে যে, পৃথিবীর সব জায়গায় মানুষের ভাবনা চিন্তা এক ধরনের বা তার প্রকৃতিগত সুত্রপাত এক জায়গা থেকেই।সাক্কারা তে যে সব tomb আমরা দেখতে গেলাম সে সব ই রাজা, রানী, পুরোহিত না উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদের। মিশরীয় রা বিশ্বাস করত যে, মৃত্যুর পরের জীবনই আসল জীবন। তাই এই মানুষ জীবনে যাই হোক না কেন, পরের জীবন কে সুন্দর করে তুলতে হবে। আর সেই কাজই ছিল তাদের প্রধান কাজ। তাই জন্যই তারা এই পিরামিড বানাত। আর পিরামিড কে সব উপায়ে সুন্দর করার চেষ্টা করত। সাক্কারা তে আমরা একটি পিরামিড এ ঢুকলাম। সেটা রাজা বা ফারাও তিতির। বেশ ৫০-৬০ ফুট নীচে নামতে হল। ঘাড় নীচু করে কোমর বেঁকিয়ে নামলাম নীচে। এবার অবাক হবার পালা। পিরামিডটির সাদা দেওয়াল জুড়ে প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় লেখা যাকে বলে hieroglyph writings. লেখা না বলে আঁকা বললেই বোধহয় ঠিক হবে। সব শেষে গেলাম সেই জায়গায় যেখানে মমি রাখা হত। এই ঘর কে বলে sarcophagus room। ভাবার চেষ্টা করতে লাগলাম যে কি করে অত বছর আগে প্রাচীন মিশরের মানুষ কি করে এই সব বানিয়েছিলেন আর কি করেই বা কি করতেন তারা।হিয়েরগ্লিফ লেখা, সাক্কারা পিরামিডের ভিতরেএই সব আঁকা বা লেখা কতবার ই তো ছবির বইতে দেখেছি। কিন্তু সামনে দেখার যে অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা সে লেখার ভাষা আমার নেই। অভিভূত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম বেশ কিছুক্ষণ। মনে হল যে আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে, সদ্য মৃত কোন প্রিয় ফারাও কে চোখের জলে শেষ বিদায় জানিয়ে এই পিরামিডে চিরনিদ্রায় ঘুম পারিয়েছিল তার রাজ্যবাসী। যত ভেবেছি তত অবাক হয়েছি। এরপর গেলাম সেই চত্বরেই অন্য একটি পিরামিড-এ। সেখানে দেওয়াল চিত্র আরও বেশি স্পষ্ট, ভাবাই যায়না যে সেগুলি এত বছর আগেকার। এখানে দেওয়াল এর বাইরের অংশের লেখা বা আঁকা দেওয়ালে গর্ত করে করে লেখা হত। আর দেওয়ালের ভিতরের অংশ এ wedged out পদ্ধতিতে, অর্থাৎ শুধু লেখা অংশ টিকে রেখে দিয়ে বাকি অংশ চেঁচে ফেলে দেওয়া হত। এর কারন ও খুব স্পষ্ট, বাইরের দিকের দেওয়াল রোদ বৃষ্টি গরম সব সহ্য করবে তাই ক্ষয় হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি তাই গর্ত করে করে লেখা হত, আর দ্বিতীয়ত দূর থেকে এই ধরনের লেখা হলে দেখতে সুবিধা হবে। আর ভিতরের দেওয়ালে কোন অসুবিধা নেই, তাই যে ভাবে খুশি ছবি আঁকা হয়েছে আর সুন্দর করা হয়েছে।প্রাচীন মিশরীয় যে কোন ছবিতে দেখা যায় যে পুরুষ ও মহিলাদের গায়ের রঙ আলাদা। পুরুষ দের গায়ের রঙ হত গাঢ় মেরুন বা খয়েরি বা একদম কালো আর মহিলাদের গায়ের রঙ হত হালকা যেমন হলুদ বা সাদা। এর কারন হিসেবে বলা যেতে পারে যে সমাজের নিয়ম অনুসারে পুরুষ রা বাইরে কাজে যান তাই তাদের গায়ের রঙ গাঢ় হয়ে গেছে। ভাবতে অবাক লাগে যে সেই অত বছর আগেও এত শক্ত সামাজিক ধারণা মিশরীয়দের ছিল। মিশরীয় সমাজে দেবীই হোক বা সাধারণ নারী সবাই গৃহ বধুর তকমা পেত। তাদের মধ্যেও এই ধরনের বিভেদ দেখে বেশ অবাক হতে হয়। আর এতেই ধারণা আরও স্থির হল যে মানুষের ভাবনা চিন্তা সব সময়ই স্থান কাল পাত্র নির্বিশেষে একই ধরনের হয়ে থাকে।স্টেপ পিরামিদ, সাক্কারাএখান থেকে আমরা গেলাম সেই বিখ্যাত স্টেপ পিরামিড দেখতে। archeological কাজ চলার জন্য একদম কাছে যাওয়া হল না আর ভিতরে ঢোকা গেলনা। মিশরের প্রধান স্থপতি ইমহতেপ (Imhotep) এই পিরামিডটি সবার প্রথমে বানান। এই পিরামিড টি তখন কার ফারাও Djoser এর জন্য গঠন করা হয়।এই পিরামিডটির প্রায় ৬ টি ধাপ আছে, যা মাটি থেকে ক্রমশ ছোট হতে হতে উপর দিকে উঠেছে। এই পিরামিড টিও হলুদ রঙ এর বেলে পাথর বা sand stone দিয়ে তৈরি। হলুদ রঙের, বিশাল এক স্থাপত্য ৪০০০ বছর ধরে ক্রমশ ধীরে ধীরে স্বর্গের দিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে মিশরীয় সভ্যতাকে সেই স্বর্গের উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।Papyrus এ আঁকা রাজা অসিরিসের শেষ বিচার সভাএই পিরামিড চত্বরেই আমরা দেখলাম ফারাও Djoser এর mortuary temple। এই temple বা মন্দির মানুষের মৃত্যুর পর মমি তৈরি করার জায়গা। মিশরীয়দের নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুর পর ৭০ দিন ধরে মমি তৈরির কাজ চলে। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর দেবতা Anubis বা শেয়াল দেবতা এই পদ্ধতি শুরু করেন। প্রথা অনুসারে মৃতের দেহ থেকে প্রথমে যকৃৎ (liver) , শ্বাসযন্ত্র বা ফুস্ফুস (lungs) , পাকস্থলী (stomach) , ও অন্ত্র (intestine) বের করে নেওয়া হত। এই অঙ্গ গুলিকে এক একটি কৌটো এর মধ্যে ভরে রাখা হত কিছু রাসায়নিক তরলের মধ্যে, যার রহস্য আজও অজানা। আর এই কৌটো গুলি বিভিন্ন জন্তুর মুখের ছবি দেওয়া হত। এই ধরণের কৌটো গুলি কে বলা হয় canopic jars। মস্তিষ্ক বের করে আনা হত নাসারন্ধ্র দিয়ে। মস্তিষ্ককে সংরক্ষণ করা হত না। হৃদয় রেখে দেওয়া হত শরীরের মধ্যে। মিশরীয় রা বিশ্বাস করত যে মানুষের দেহে হৃদয়ই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই হৃদয় বা মিশরীয় ভাষায় Ba এর বিচার, মানুষের জীবনের শেষ দিনে, ভগবান Osiris এর দরবারে হবে। সেই খানেই স্থির হবে যে এই মানুষটি স্বর্গে যাবার উপযোগী কিনা। যদি উপযোগী হয়, তাহলে Ba রূপ বদলে হয়ে যাবে কা (Ka),যা অবিনশ্বর।Papyrus এ আঁকা আনুবিস শেষ বিচার করছেন ছবি ইন্টারনেটFinal judgement বা শেষ বিচার হয় দেবতাদের রাজা বা মিশরীয়দের প্রধান দেবতা অসিরিস বা Osiris এর দরবারে। সেখানে ১২ জন দেবী (যারা দিনের ১২ ঘণ্টার প্রতিনিধি) মানুষের আত্মাকে প্রশ্ন করেন ১২ টি প্রশ্ন। এর মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হলে স্বর্গে যাবার সুযোগ ঘটে। যেমন উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজা অসিরিস, চেয়ারে বসে বিচার করছেন। আনুবিস দাঁড়িপাল্লাতে বা কে ওজন করে দেখছেন। অন্যান্য দেবতারা সেই বিচারের ফলাফল আবার অসিরিস কে জানাচ্ছেন। কি চমৎকার দর্শন, কি সুন্দর সহজ চিন্তাধারা ।আর এই ছবিতেও আনুবিস কে সেই বিচার কাজে সাহাজ্য করতে দেখা যাচ্ছে। এই স্টেপ পিরামিড চত্বর থেকেই দূরে মরুভুমির মধ্যে দেখা গেল bent pyramid, red pyramid আর আরও দূরে Great Pyramid বা Giza.Step Pyramid ঘুরে আমরা গেলাম প্যাপিরাস কারখানাতে। সেখানে প্যাপিরাস তৈরি করা দেখলাম। পদ্ধতি টা বেশ সুন্দর ও সহজ। প্যাপিরাস আসলে এক ধরনের ঘাস জাতীয় গুল্ম। সেই গাছের নরম ডাল কেটে জলে ভিজিয়ে রাখলে, পাট গাছের মতই তার পাতলা আস্তরণ বেরিয়ে আসে। এবার সেই আস্তরণ গুলিকে লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি, তাঁত বোনার মত করে রেখে কোন ভারি বস্তু দিয়ে চেপে রাখতে হয় অনেক্ষন। এই ভাবে চাপে রাখার ফলে তৈরি হয় প্যাপিরাস বা paper। এই পাপিরাস থেকেই পেপার শব্দটি এসেছে, পেপার ও বর্তমানে তৈরি হয় খানিকটা এই পদ্ধতি ধরেই। আশ্চর্যের বিষয় অত বছর আগে মিশরীয়রা কি করে এই প্রথা আবিষ্কার করেন। এই কারখানায় আদর আপ্পায়নের ব্যাপার ই আলাদা। সেখানে যেতেই আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হল আমরা hibiscus tea খাব কিনা? আর খেলে কেমন খাব? ঠাণ্ডা না গরম। জবার চা হয় জানতাম না, গরম ও ছিল ভাবলাম ঠাণ্ডাই খাই। যেমনি বলা ওমনি এসে গেল ছোট গ্লাসে করে লাল রঙ এর পানীয়। বেশ ঠাণ্ডা । জবার চা মানে লাল ত হবেই, তবে চা সুলভ কোন গন্ধ নেই। চেখে দেখলাম, বেশ টক মিষ্টি খেতে আর গরমের মধ্যে মনে হল অমৃত। সেই চা খেয়ে এতটাই আপ্লূত হলাম যে দেশে ফিরে Amazon থেকে খুঁজে order দিয়ে দিলাম। এখনও সে চা বাড়িতে আছে আর গরম কালে খেতে ভালই লাগে।Papyrus গাছদুপুরে খাবার পর আমরা Giza যাবার রাস্তা ধরলাম। তখনও নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। বেশ কিছুটা traffic jam কাটিয়ে পৌঁছলাম Giza চত্বরে । রাস্তায় একটা বাঁক নিয়ে গাড়ি যখন ঘুরলো, দেখতে পেলাম রাজা খুফুর পিরামিডকে। পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতমকে। দূর থেকে দেখেই তার বিশালত্বে কেমন যেন ঘাবড়ে গেছিলাম। তারপর মনে হল স্বপ্ন দেখছি । নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে সত্যি ই আমি Great Pyramid এর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এতদিন এর স্বপ্ন দেখার চূড়ান্ত পরিনতি আমার সামনে। পৃথিবীর প্রাচীনতম ইতিহাস এর সাক্ষীর সামনে আমি।Giza হল রাজা বা ফারাও খুফুর সমাধি বা পিরামিড। এই ফারাও আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে মিশরে রাজত্ব করেন। তাঁর সময়কাল প্রায় ৫০ বছরের। মিশরের ইতিহাস এ এই সময়টিকে পুরানো রাজত্বকাল বা old kingdom বলে। ফারাও খুফু Cheops নামেই পরিচিত ছিলেন। শোনা যায় এই নাম তাকে গ্রীক ঐতিহাসিকরা দিয়েছিলেন।Great Pyramid, ফারাও খুফুর পিরামিডখুফুর ;পিরামিড প্রায় ৪৮১ ফুট উঁচু, আর এটি যে মাটির উপর দাঁড়িয়ে আছে, তার দৈর্ঘ্য ৭৫৬ ফুট। মোটামুটি ভাবে ২৫৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এটি বানানো শেষ হয়। এই পিরামিড এর গায়ে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন পাথর আছে , যার এক একটির ওজন ৩ টন । এই পিরামিড এর হলুদ পাথরের উপর আগে চুনা পাথরের প্রলেপ ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটি আর নেই। সাদা চুনা পাথরের প্রলেপ এর জন্যই এই পিরামিড এর আসল রঙ ছিল ধবধবে সাদা। সাহারা মরুভুমির মধ্যে এই বিশাল আকৃতির সৌধটি যখন রোদের আলোয় ঝলমল করত , তখন তাকে ঠিক এক টুকরো হীরে বলেই মনে হত। এর মাথার উপরে আরও ১৪ ফুট উঁচু একটি অংশ ছিল। আজ যা আর দেখতে পাওয়া যায়না । সেই উচ্চতা যোগ করলে আজও এই পিরামিডটি পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ সৌধ, যা মানুষের হাতে তৈরি। তবে তা সত্ত্বেও এর বিশালতা ও গঠন আজও মানুষকে অবাক করে।একসাথে তিনটি পিরামিড, গিজাফারাও খুফুর পিরামিড এর পাশেই আছে ফারাও খাফ্রেন (Khafrain) এর পিরামিড। এই রাজাও old Kingdom এর সময়ই রাজত্ব করেছিলেন। এই পিরামিডটির একদম উপরের অংশে সাদা চুনা পাথরের প্রলেপ কিছুটা হলেও আছে। এটি গিজার থেকে উচ্চতায় একটু ছোট। তবে গিজা পিরামিডের উপরের ১৪ ফুট অংশ না থাকায় এটিকে অনেক সময়ই বেশি উঁচু বলে মনে হয়। তবে যে পরিমান ভুমির উপর পিরামিড দুটি বানান হয়েছে সেটি লক্ষ্য করলেই সেই ভুল ভাঙে।ফারাও মানকুরের পিরামিড, গিজাএই পিরামিডটির পিছনে আছে আরও একটি ছোট মাপের পিরামিড। এই ছোটটি ফারাও মানকুরের (Mankure)। যে কোন পিরামিডের ভিতরেই ঢোকা যায়, তবে তার জন্য আলাদা টিকিট এর ব্যবস্থা আছে। খুফুর পিরামিড সারা বছর পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে আর বাকি দুটি ৬ মাস করে এক একটি। তবে এই পিরামিড গুলির ভিতরে কিছুই নেই। না আছে কোন ছবি, লেখা, না কোন জিনিস পত্র। সব ই সেগুলি জাদুঘর এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা মানকুরে পিরামিডের জন্য আলাদা টিকিট কেটে তার ভিতরে গেলাম। এখানেও প্রায় ৫০ ফুট নীচে নামতে হল। তবে আগের বারের অভ্যেস থাকায় খুব অসুবিধা হয়নি। ভিতরে গিয়ে প্রধান ঘরটিতে দাঁড়ালাম, সামনে একটি পাথরের বাঁধানো জায়গা, যেখানে শোয়ানো ছিল ফারাও মানকুরের সারকোফাগাস।মিশরে পিরামিড তৈরি হবার সময় থেকেই পিরামিডের ধন সম্পত্তি লুঠ করার প্রবনতা দেখা যায়। ফারাও রা অনেক চেষ্টা করেও সেই সব চোরদের আটকাতে পারেননি। মিশরের মানুষ জানত যে পিরামিদের মধ্যেই লুকানো আছে ফারাওদের সব ধন সম্পত্তি। তাই পরজন্মে বিশ্বাস থাকলেও চুরি করতে তাদের বাঁধেনি। তারাই পিরামিডগুলিকে নষ্ট করেছে বেশি। পরের দিকে ফারাওরা বুঝতে পেরে, পিরামিড বানান বন্ধ করে অন্য রকম ভাবে তাদের সৌধ বানাতে থাকেন। তবে তাতেও যে কত টা চুরি আটকানো গেছে, সেটা সবার অজানা।এখান থেকে আমরা গেলাম solar boat museum বা সৌর নৌকা দেখতে। এই সৌর নৌকা কিসে কাজে লাগে সে বিষয়ে পরে আসছি। সৌধ গুলির পাশে নৌকা থাকার কয়েকটি কারণ আছে। মিশরীয়দের মতে মৃত্যুর পর স্বর্গে যাবার রাস্তা দুটি, পায়ে হেঁটে বা নৌকা চড়ে। তাই প্রতি পিরামিড এর পাশে একটি করে নৌকা রাখার জায়গা ও কিছু নৌকার ধ্বংসাবশেষও পাওয়া গেছে। সেগুলির মধ্যে অবশ্যই ফারাও খুফুর টি সব থেকে বড়। নীচের ছবিটিতে সেই সৌর নৌকা রাখার গর্ত খানি দেখা যাচ্ছে।সৌর নৌকা রাখার গর্তএই নৌকাটি বর্তমানে পাশেই তৈরি একটি মিউজিয়ামে আছে। এই নৌকাটি এতটাই বড় যে এর ছবি তোলা প্রায় অসম্ভব। আর এই museum এ ছবি তুলতেও দেয়না। তাই মনের ক্যামেরাতেই সেই ছবি ধরে রাখতে হল। নীচের ছবি টি ইন্টারনেট এর সৌজন্যে। তবে সেখানেও পুরো নৌকা টি বোঝা যাচ্ছেনা।নৌকা থাকার আরও একটি কারণ আছে। মিশরীয় পুরাণ অনুযায়ী, তাদের প্রধান দেবতা অসিরিস যিনি অধোলোক এর দেবতা, ভবিষ্যৎ জীবনের দেবতা ও ফলশালিত্বের দেবতা। তাঁর মৃত্যু হয় তাঁর ভাই সেথ এর হাতে। সেথ হলেন মিশরীয়দের মন্দ দেবতা। সেথ অসিরিসকে হত্যা করবার পর তাঁর দেহকে ১৮ টি টুকরো করে মিশরের সব প্রান্তে ছড়িয়ে দেন। তার থেকে জন্ম নেয় মিশরের ১৮ টি রাজ্য। অসিরিস এর স্ত্রী দেবী ইসিস, যিনি জাদুর দেবী, তিনি তখন সেই ১৮ দেহাংশ খুঁজে নিয়ে, জোড়া দিয়ে আবার অসিরিস এর দেহ সম্পূর্ণ করেন। অবশেষে ফারাও অসিরিসের মৃতদেহ নিয়ে মমি প্রক্রিয়া শুরু হয়। দেবী ইসিস (Isis) যিনি জাদু,সৌন্দর্য, ও প্রেমের দেবী, স্বামী অসিরিস এর মমি তৈরি হয়ে গেলে সৌর নৌকা করে স্বর্গে যাত্রার অনুমতি দেন। নৌকার একদিকে দেবী ইসিস ও অন্যদিকে দেবী নেপথিস (যিনি অসিরিস এর দ্বিতীয় স্ত্রী ও সৎ বোন) বসেন, দেবীরা অসিরিস কে এই ভাবেই পরবর্তী জীবনে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এই ভাবেই এটি একটি নিয়ম হয়ে যায় যে, মৃত্যুর পর মমি হওয়া দেহ নৌকা করে পিরামিডে যাবে। এই যাত্রায় ফারাও এর সঙ্গে থাকবেন তাঁর একান্ত আপন পরিবার বর্গ। বিশেষ করে দু জন মহিলা আত্মীয়াকে থাকতেই হবে। আর এই ছবিও খুবই পবিত্র মনে করা হত। এই গল্প শুনে কেমন আমাদের পুরাণের সতী দেবী ও মহাদেব এর গল্প মনে পরে যায়। সেখানেও সতী দেবীর দেহাবশেষ দিয়ে তৈরি ৫১ টি ধর্মীয় স্থান। ভারতীয় জীবনেও এই স্থানের গুরুত্ব যথেষ্ট।নৌকাটি এতটাই বড় যে এর ছবি তোলা প্রায় অসম্ভবফারাও খুফুর সেই সৌর নৌকা মাটির তলায় প্রায় ৩০ ফুট নীচে বড় বড় পাথরের চাঁই দিয়ে ঢাকা ছিল। এই নৌকার দৈর্ঘ্য ১৪৩ ফুট ও প্রস্থ ১৯.৫ ফুট।এটিকে পৃথিবীর সবথেকে পুরনো জাহাজ আখ্যা দিয়েছেন ঐতিহাসিকরা। এই নৌকাটি অনেকগুলো কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল এই জাহাজ এ একটিও পেরেক নেই। নৌকা টির ১২২৪ টি ছোট ছোট টুকরো খুলে নিয়ে, ১৯৫৪ সালে জাহাজটিকে আবার নতুন করে বানানো হয়। বিশাল একটি মিউসিয়াম করে এখন সেটিকে সংরক্ষন করা হয়েছে।সৌর নৌকার মডেল, কায়রো মিউজিয়ামসৌর নৌকা দেখে আমরা গেলাম সেই স্ফিংক্স দেখতে। বিকেল হয়ে গেছিল বলে পুরপুরি সামনে থেকে দেখতে পাওয়া গেলনা। সত্যি তার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যে সময় হয়ত থেমে গেছে। এক দৌড়ে আমি যেন পৌঁছে গেছি বহু হাজার বছর পিছনে। আরও মনে হচ্ছিল যে কত তুচ্ছ আমাদের এই একটা জীবন। এই স্ফিংক্স পিরামিডকে পাহারা দেয় বছরের পর বছর আর বর্তমান যুগের মানুষদের জানান দেয়, World fears time, and time fears pyramid।ফারাও অসিরিস ও তাঁর দুই রানী, দেবী ইসিস ও দেবী নেপথিস, কায়রো মিউজিয়ামস্ফিংক্সের মূর্তিতে সবসময়ই মুখটি হয় মানুষের আর দেহ হয় সিংহ এর। এর পিছনেও মিশরীয় দের কারণ আছে। মানুষ এর বুদ্ধি ও সিংহ এর শক্তি নিয়ে যদি সত্যি কোন প্রানী তৈরি করা যায় তাহলে সেই প্রানীই সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আর এমন শক্তিশালী প্রানীরাই পারে পৃথিবীতে রাজত্ব করতে। মিশরীয় সভ্যতায়, সব ফারাও ও রানীদের স্ফিংক্স মূর্তি তৈরি হত। প্রজা বা সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য। এই Great Sphinx হল ফারাও খাফ্রেন এর।পড়ন্ত বেলায় গ্রেট স্ফিংক্সস্ফিংক্স দেখে আমাদের সকালের সফর শেষ হল। সন্ধ্যের সময় আবার স্ফিংক্স এর সামনে এলাম light and sound প্রদর্শন দেখতে। অসম্ভব সুন্দর সেই প্রদর্শনী দেখতে দেখতে যেন আমরাও ইতিহাসকে আমাদের চোখের সামনে জীবন্ত দেখতে পেতে লাগলাম। মনে হচ্ছিল আমরাও যেন সেই সময় এরই সাক্ষী। স্ফিংক্স যেন সত্যই, কথা বলছে। আমিও যেন দেখতে পাচ্ছিলাম সম্রাট নেপলিয়ান বা আলেকজান্ডার এসে স্ফিংক্সের সামনে নতজানু। ইতিহাস এর শুরুই তো এখান থেকে। আর সেই ইতিহাস সৃষ্টির প্রথম দিন থেকে আজকের দিন পর্যন্ত স্ফিংক্স সব দেখেছে নিজের চোখে। সে যদি সত্যি কথা বলতে পারত তাহলে বলত গল্প, ছোটবেলার গল্প দাদুদের মত, তাহলে কত গল্পই না বলত সে। নির্বাক শ্রোতা হয়ে শুধু দেখে চলেছে সে। ভুত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমান সবই যেন তার হাতের মুঠোতে। সব পরিবর্তনকে সহ্য করে সাহারা মরুভুমির বুকে দাঁড়িয়ে আছে স্ফিংক্স। আর থাকবেও আরও অনেক অনেক বছর, যখন আমরা কেউ থাকবনা। সেই দিনও সে একই ভাবে সবাইকে ইতিহাস শোনাবে স্ফিংক্স।গ্রেট স্ফিংক্সআজকের দিনের যাত্রা এখানেই শেষ করে হোটেল মুখি হলাম, সঙ্গে রইল স্ফিংক্স এর বলা গল্প আর রাতের আলোয় দেখা পিরামিড এর স্মৃতি।শ্রেয়া ঘোষ (বর্ধমান)ক্রমশ...

নভেম্বর ১৩, ২০২২
নিবন্ধ

শেষ দেখা (দ্বিতীয় পর্ব) -ছোট গল্প

বেলা তখন এগারো টা হবে কলিং বেল বেজে উঠল। বিতান দরজা খুলতে গেলে তন্দ্রা ওর বিছানায় উঠে বসে; মনের কোনে আজও একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হতে দেখে ও নিজেই খুব অবাক হয়। আজও কি তাহলে অন্তরের গভীরে রয়ে গেছে অর্কর প্রতি ভালোবাসা!ধীর পায়ে বেরিয়ে আসে ড্রয়িং রুমে। ওর পিছনে ছায়ার মত আসে চাঁদ; একটু যেন চমকে গেল অর্ক। এটা কে? নিজের মনে নিজেকে প্রশ্ন করে। এ যে আমার ছোট বেলা ভাবে অর্ক। এসব ভাবতে গিয়ে খেয়াল করে নি সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তন্দ্রা।কেমন আছো? জিজ্ঞাসা করে তন্দ্রা।ওর ডাকে সম্বিত ফিরে আসে অর্কর। হ্যাঁ, ভালো আছি। বলে তাকায় তন্দ্রার দিকে। তন্দ্রার শরীরের কথা শুনেছে বিতানের কাছে। তবুও চোখের সামনে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ভাবে সেই সুন্দর তন্বী মেয়েটা রোগের কারণে কি হয়েছে।তন্দ্রা ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার জন্য বলে ওঠে তুমি যে সময় বের করে আসতে পেরেছ সে জন্য ধন্যবাদ।এতক্ষণে নিজের মধ্যে ফিরে আসে অর্ক, বলে আসতে তো আমাকে হতোই। আমার যে অনেক কিছু বলার ছিল যা বলার সুযোগ পাইনি।ওদের এই কথোপকথনের মধ্যে শুচি উঠে রান্না ঘরের দিকে যায় এবং বিতানকে ইশারায় ডেকে নিয়ে যায়।অর্ক বুঝতে পারে না কিভাবে শুরু করবে। তন্দ্রার কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর হাতটা ধরে বলে আমাকে ক্ষমা করে দে।আমার প্রতি তোর অনেক অভিযোগ আছে আমি জানি। আমি যে এতগুলো বছর মনে কি গ্লানি বয়ে বেরাচ্ছি সে আমিই জানি। তুই এখন আর বিশ্বাস করবি না আমি জানি,তবু বলছি। আমি বাধ্য হয়েছিলাম সেদিন।অর্ক বলতে থাকে, তন্দ্রা আমি নিজের ইচ্ছায় বিয়েটা করিনি। আমি চাইই নি বিয়েটা করতে। আমি তো তোকে ভালোবেসেছি। আমি শুরু থেকেই তোকে ভালোবাসি, তোর সাথেই জীবন কাটাতে চেয়েছি। কিন্তু উভয়ের পড়া আর কেরিয়ারের কথা ভেবে বলা হয়ে ওঠেনি। তাই সেবার দিল্লিতে সেমিনারে্ গিয়ে যখন শুনলাম তুই বাইরে হায়ার ডিগ্রীর জন্য যাওয়ার চেষ্টা করছিস তখন তোকে আমার মনের কথা জানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।আর বলেও দিলাম কোনো কিছু না ভেবে। আমি কিন্তু জানতাম না ঠিক কি হবে তোর উত্তর। তবে আমার উপর তোর ভরসা আর বিশ্বাস দেখে মনের কোনে একটা আশা ছিল আবার ভয়ও ছিল যদি আমার জন্য তোর মনে সেরকম কিছু না থাকে তাহলে নিজের কাছে ছোটো হয়ে যাব। তুই যদি অন্য কাউকে পছন্দ করিস। এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে বলেও দিলাম। তোর কাছে যখন সাড়া পেলাম তখন আমার কি অবস্থা হয়ে ছিল সেটা তো তুই সবথেকে ভালো জানিস।তার ফল যে তুই পেয়েছিস সে তো দেখলাম তোর সাথে রয়েছে।ওই রকম আনন্দ আমার আগে হয় নি; কলকাতা ফেরার পর সেদিন প্রথম বাড়ি ফিরে চন্দ্রিমাকে ফোন করে ডাকি। ওই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু আর তোর দিদি তাই ওকে ই খবরটা প্রথম দেব ঠিক করি আর ওর মাধ্যমে আমাদের বাড়িতে জানাব এটাও ভাবি। কিন্তু ও জানার পর যেটা ঘটল সেটা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি। আমি তো ভাবতাম ও কাউকে পছন্দ করে, ওর কাছে সেরকমই শুনেছিলাম। যদিও খোলাখুলি কিছু বলেনি কোনো দিন। আমি তো খুব ভালো বন্ধু ছাড়া ওকে কখনো কিছু ভাবিনি। অতি উৎসাহিত হয়ে ওকে সেদিন কথাটা বলতে যাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো ভুল। আমি ভাবিনি নিজের দিদি হয়ে এইভাবে হিংসা করতে পারে। আমার সম্বন্ধে এরকম ভাবতে পারে সেটাও বুঝিনি। ওর সাথে যখন এই নিয়ে কথা, তর্ক বিতর্ক চলছে তখন তুই এসেছিলি, আমি মায়ের কাছে পরে শুনলাম। আমি যে ভয়টা পেয়েছিলাম সেটাই ঘটল।তুই অভিমান করে চলে গেলি, কোনো রকম কোনো যোগাযোগ করলি না, করার পথ ও বন্ধ করে দিলি। আমি তখন তোর দিদির অভিনয়ের কাছে অসহায়। সবাই তখন আমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে লাগল। আমার মা,বাবা, তোর মা সবাই। ডাক্তার বললেন ওকে কোনো রকম মানসিক চাপ দেওয়া চলবে না। তখন বাধ্য হয়ে আমি বিয়েতে রাজি হই। ও আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেনি। শুধু তোর প্রতি হিংসা করে, তোর কাছ থেকে আমাকে দুরে সরিয়ে নিতে এই বিয়ে। প্রথম প্রথম তোর কথা উঠলেই সিনক্রিয়েট করত। তারপর থেকে আমি চুপচাপ থাকি। ও ওর কাজে সফল হয়েছে। ও আমাকে তোর কাছ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল সেটা পেরেছে।অর্ক ঝড়ের মতো কথাগুলো বলে গেল। এমন সময় শুচি খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে ঢুকল।কিছু মনে করোনা তোমার শেষের কথাগুলো কিছুটা শুনেছি, তুমি আমাদের জানাতে পারতে। তুমি কিছু ই বলোনি, শুধু বারবার তন্দ্রার খোঁজ করতে।ওটা আমার খুব ভুল হয়েছে, সেসময় তোদের সব জানালে ভালো করতাম। আজ তোদের আর আমার কথা বিশ্বাস হবে না। বিশ্বাস করা না করা তোদের ব্যাপার। আমার বূকের উপর একটা পাথর চাপানো ছিল এতদিন আজ তন্দ্রাকে সব বলে কিছু টা হালকা লাগছে। হ্যাঁ, আর একটা কথা যেটা না বললে সম্পুর্ণ হবে কথা। আমাদের শুধু বিয়েটাই হয়েছে। ও চেয়েছিল তন্দ্রাকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে দিতে, আমাকে ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতে ও সেটা এক সপ্তাহের মধ্যেই নিজের মুখে আমাকে বলেছে। সেদিন থেকে ও আমার কাছে পৃথিবীর জঘন্যতম মানুষ। আমি চেষ্টা করি সবসময় ওর সামনে না পড়তে। আমাদের দেখা হয়না বললেই চলে। ও থাকে ওর জীবন নিয়ে। ওর কলেজ, আউটিং, পার্টি এসব নিয়ে।তবে ইদানিং যেন একটু পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। জানিনা তার মধ্যে আবার কিছু আছে কিনা!তন্দ্রা এই কথাগুলো শোনার পরে অর্কর দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকালো যার মধ্যে কোনো ক্ষোভ, দুঃখ, রাগ কিছু তো ছিলই না বরং একটা কষ্ট, সহানুভূতি দেখতে পেল শুচি।অর্ক এবার তন্দ্রাকে বলল আমার উপর রাগ, অভিমান, ঘৃণা এসব বুকে নিয়ে চলে গেছিলি তো আমি বুঝেছিলাম তখনই যখন মা আমাকে বলেছিলেন তুই এসেছিল। কিন্তু এতবড় একটা খবর তুই আমার থেকে আড়ালে রাখলি!! এতটা অবিশ্বাস!!না না, তা নয় বলে ওঠে তন্দ্রা।তবে আজ যখন তুই এই অবস্থায়, ছেলে এতবড় হয়ে গেছে তখন তুই আসলি, কেন আগে আমাকে বলিসনি?আমি চলে গেছিলাম ঠিক। রাগ হয়েছিল নিজের উপরে। যে আবেগ আমি ধরে রেখেছিলাম এতদিন কেন সেটা ভাবলাম সেই ভেবে খুব রাগ হয়েছিল নিজের উপর। তাই ঠিক করছিলাম তোমাদের জীবন থেকে নিজেকে অনেক দুরে সরিয়ে নিয়ে যাব। তাই পরেরদিন বাড়ি থেকে দিল্লি চলে গেলাম, সাতদিনের মধ্যে লন্ডন।কিন্তু ভাগ্য আমাকে সাথ দিল না। আমি তোমাকে ভুলব ভাবলে কি হবে, ভোলার পথ তো ঈশ্বর বন্ধ করে দিয়েছে সেদিন রাতে।যেদিন বুঝতে পারলাম সেকথা প্রথমে তোমাকেই জানাবো বলে ফোন করেছিলাম। কিন্তু ফোন ধরলো তোমার স্ত্রী। সেকথা শুনে আমার কি হয়েছিল জানিনা। তবে জ্ঞান ছিল না। যখন জ্ঞান ফিরল নিজেকে হসপিটালের বেডে দেখলাম।তারপর সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফোন করে জানতে পারলাম দিদির সাথে তোমার বিয়ের কথা। মা তখন বলেছিল তোকে জানাই নি, তুই কষ্ট পাবি। আর তুই তো এখানে নেই। দু বোনের এই নিয়ে বিবাদ হোক আমি চাই নি। আমি মাকে আর কিছুই জিজ্ঞাসা করিনি। আর কিই বা জিজ্ঞাসা করতাম?আমার তখন বলার কিছু ছিলনা। আমি শুধু বলেছিলাম, তাহলে আমি দুরেই থাকি, দেশে আর ফিরে যাব না।তাই আর দেশে সেভাবে আসা হয়নি। আর তোমার জীবনে আমার জন্য যাতে কোনো অশান্তি না হয় তাই বলিনি কিছু।জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলাম নিজের মত করে।আমার এই লড়াইয়ে আমাকে সাথ দিয়েছে আমার রুমমেট আফরিন আর ছিলেন, না ছিলেন কেন আজও আছেন আমার বাড়িওয়ালা মিসেস টেলর। আমরা ভারতীয়রা ভাবি না যে ইউরোপীয় মহিলাদের মধ্যে মাতৃত্ব বোধ নেই! একদম ভুল ভাবনা। আজ পর্যন্ত উনি আমাকে এবং আমার ছেলেকে যেভাবে আগলে রেখেছেন কোনো ভারতীয় মহিলা পারবে না। আমার প্রতি ওনার স্নেহের কারণ ওনার মৃতা মেয়ে। সে নাকি আমার মতো ছিল অবশ্যই ইউরোপীয় ভার্সন বলে একটু হাসার চেষ্টা করে তন্দ্রা।আজও আমি ওনার কাছেই থাকি। মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়েছি আমিও।যাক সেসব কথা। আমি তোমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে চাই নি কারণ আমি ভেবেছিলাম আমি তোমার আর দিদির মাঝে অযাচিতভাবে অনুপ্রবেশ করে ফেলেছি। সেদিন যা ঘটে ছিল সেটা সাময়িক আবেগ। আমি ভেবেছিলাম তুমি দিদিকে ই ভালোবাসো। আমি ভাবিনি দিদি আমার সাথে এরকম করতে পারে। আমার রাগ হয়েছিল মায়ের উপরে , পরে ভাবলাম মা হয়ত দিদির আর তোমার ব্যাপারটা জানত। এটা ভাবলাম কারণ আমি যখন বলেছিলাম তখন মা এমনভাবে অবাক হয়েছিল যেন আমার কথাটা অসম্ভব। তাই আমি আর কোনো কথা কাউকে জানাইনি। শুধু শুচি জানত পরে বিতান জেনেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বলে অসহায় ভাবে তাকালো তন্দ্রা। সেই আসতে হলো আর তোমার সামনাসামনি হতেও হলো এই ছেলের জন্য। এত কথা একসঙ্গে বলে তন্দ্রা হাঁফাতে লাগলো। শরীর খুব দুর্বল।অর্ক শুচিকে বললো ওকে ঘরে নিয়ে যা, রেস্ট নিক। অনেকক্ষন বসে আছে। আর ওর ছেলেকে পাঠিয়ে দে আমি একটু কথা বলি।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমানক্রমশঃ ...

এপ্রিল ২৪, ২০২২

ট্রেন্ডিং

রাজ্য

শিশুর মাদকাশক্তি! উদ্ধারের উপায়? আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসে আলোচনা সভা বর্ধমানের স্কুলের

প্রতি বছর ২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী ও অবৈধ পাচার প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। এই বিশেষ দিনটি আমাদের স্মরণ করায় মাদক ব্যবহারের ফলে কি ক্ষতি হতে পারে এবং এবং অবৈধ মাদক পাচারের জন্য স্মাজের কি সমস্যা হয়। মাদক শরীর, মন এবং ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মাদক সেবনের ফলে যেরকম শরীরের ক্ষতি হয় ঠিক সেইভাবে মাদক সেবন একটি মানুষকে সমাজের মুল স্রোত থেকে দুরে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে একাকী করে তুলতে পারে। মাদক সেবন মানুষকে অসুস্থ করে তোলে এবং সুখী জীবন যাপন করতে বাধা দেয়।একজন শিক্ষার্থী হিসেবে মাদক থেকে দূরে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে না বলতে হবে এবং বন্ধুদেরও মাদক থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করতে হবে। আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী উপলক্ষে আজ সিএসআর বক্স থেকে কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ে এসেছিলেন শ্রেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বয়ঃসন্ধির সময় ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত বিদ্যালয়ে কিরকম সমস্যার মধ্যে পড়ে এবং কিভাবে তার সমাধান করা উচিত সে বিষয়ে বিসদে আলোচনা করলেন। শ্রেণিকক্ষে তথা বন্ধুবৃত্তে নানা মানসিকতার পড়ুয়া থাকে, কেউ কেউ বেশি বয়সেরও হয়। তারা নেশার মতো নানারকম ক্ষতিকর অভ্যাসের দিকে অন্যদের আকর্ষণ করে। সহপাঠীর কাছ থেকে খারাপ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাহলে উপায়?বক্তা মদ খাওয়ার বিভিন্ন ক্ষতি ব্যাখ্যা করেন - শারীরিক আর মানসিক স্তরে। এইরকম খারাপ বন্ধু যেন সীমা লঙ্ঘন না করে এটা আগে থেকে দেখা উচিত। তিনি বলেন, কেউ প্রতিরোধ না করতে পারলে তৎক্ষণাৎ তোমদের শিক্ষকদের এবিষয়ে জানানো উচিত। যদি কোনও শিশু জোরপূর্বক মাদকাসক্তির শিকার হন, তাহলে ১০৯৮ নম্বরে ফোন করে প্রথমে শিশু সুরক্ষার জন্য সহায়তা চাইতে পারে, এবং তারা তোমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে। ১০৯৮ নম্বরে নেশা নিয়ে সমস্যার বিষয়ে জানানো যায়। বা গুরুজনদের কাউকে অবশ্যই বলা উচিত।বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ড.সুভাষচন্দ্র দত্ত জনতার কথাকে জানান, এই জাতীয় প্রোগ্রাম আমরা সবসময়েই স্বাগত জানাই। সমাজে নেশার ক্রমবর্ধমান প্রকোপের দিকে তাকিয়ে তাদের রক্ষা করা আমাদের সবার কর্তব্য।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

অরিজিৎ সিং বর্ধমানে? শুটিংয়ের জায়গা খুঁজতে গেলেন বাংলা সিনেমার গ্রামে

মঙ্গলবার ঠিক সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ অরিজিৎ সিং এলেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের মৌখিড়া জমিদার বাড়ির কাছে। ঘুরে দেখলেন জেলার একমাত্র জঙ্গল মহলের কালিকাপুর রাজবাড়িও। ছবি তুললেন রাজবাড়ির পুরোহিত পিগলু ওরফে গোপাল চক্রবর্তীর সঙ্গে। তাকে নিরাপত্তাহীন জঙ্গলের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরতে দেখে অবাক হন অনেকে। শোনা যায় সম্প্রতি অরিজিৎ সিং বোলপুরে এসেছেন এবার এলেন আউশগ্রামে হঠাৎই। জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং একটি নতুন ছবির শুটিংয়ের জন্য রেকি করতে এসেছেন বলে জানান চিত্রনাট্যকার, লেখক, আউশগ্রামের ভূমিপুত্র রাধামাধব মণ্ডল। তিনি আরও জানান, যে তিনি ইলামবাজার সংলগ্ন অঞ্চলে শুটিংয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গা খুঁজছেন বেশ কয়েক দিন ধরেই। তাঁকে এদিন হঠাৎ করে আউশগ্রামের রাস্তায় দেখেই চমকে ওঠেন সকলে। যদিও তাঁর আশার বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ গোপনীয়।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশি গ্রেফতার

সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশী যুবককে গ্রেপ্তার করলো রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে রঘুনাথগঞ্জের তেঘরি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম কাইয়ুম রেজা (২৪)এবং জাহির রহমান(৩৫)। উভয়ের বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ। বুধবার ধৃতদের জঙ্গিপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ। যদিও কি উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল ধৃতরা কিংবা কিভাবেই বা পার হয়ে এসেছে তারা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে। ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয়ে চিকিৎসার জন্য ২১ লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেফতার দুই

অভিনব কায়দায় ২১ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করলো বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পরিচিতের নাম বলে চিকিৎসার জন্য টাকা ধার নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর নভেম্বর মাসের ২ তারিখে পেট্রাপোল থানার পুরাতন বনগাঁ এলাকার বাসিন্দা অমিত হালদার বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলেন, অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয় দিয়ে তার কয়েকজন পরিচিতের সুপারিশ নিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য টাকা ধার দিতে বলেন। ঐ ব্যক্তি ফোন মারফত বলেন, তিনি ভারতে চিকিৎসা করাতে আসবেন তার জন্য টাকা প্রয়োজন এবং তাকে ধার দিতে অনুরোধ করেন, আশ্বাস দেন টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। অমিত বাবু তার কথায় তাকে ২১ লক্ষ টাকা ধার দেন এবং পরবর্তীতে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অমিত বাবুর অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই প্রতারক প্রানতোষ বনিককে শিলিগুড়ি থেকে এবং বিকাশ তামাংকে দার্জিলিং এর মিরিক থেকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বুধবার ৬ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করেছে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জানতে চায় এই প্রতারনার পিছনে আর কারা কারা জড়িত এবং এই প্রতারনার জাল কতদূর ছড়িয়েছে।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

পর্যটনে জোর, পূর্ব বর্ধমান জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলি তুলে ধরতে শিবির

পর্যটন শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একাধিক উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে আধুনিক পরিকাঠামো, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচারে ঢালাও জোর দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে শুধু রাজস্ব বৃদ্ধিই নয়, বাড়ছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও। রাজ্য সরকারের সাথে সাথে জেলা প্রশাসন ও নানা উদ্যোগ নিচ্ছে পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে।পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন দুদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করল। বৃহস্পতি ও শুক্রবার জেলার সদরে নিউ কালেক্টর বিল্ডিংর রাসবিহারী সভাকক্ষে এই শিবিরে যোগ দেন পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান পর্যটন আধিকারিক ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে অবিভক্ত বর্ধমানের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলির প্রচার ও প্রসার করতেই এই আয়োজন বলে জানানো হয়। শিবিরে যোগদান করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যটন বিভাগের অধ্যাপক মীর আব্দুল শফিক, দিলীপকুমার দাস, পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং (আইএএস)।দুদিনের শিবিরে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে সার্কিট ট্যুরিজমের পরিকল্পনা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। এছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভুম, পশ্চিম বর্ধমান, নদীয়ার মত লাগোয়া জেলাগুলির পর্যটন কেন্দ্রগুলির সঙ্গেও পূর্ব বর্ধমানকে কি ভাবে জোড়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। পৌরানিক মত অনুযায়ী সারা দেশের যে সতীর ৫১টি বা ৫২টি মূল শক্তিপীঠের তালিকা পাওয়া যায় তাতে পূর্ব বর্ধমানের একাধিক শক্তিপীঠ আছে। এছাড়াও অম্বিকা কালনা ও বর্ধমান শহরে দুটি ১০৮ শিব মন্দির, বিজয় তোড়ণ (কার্জন গেট), শের আফগান, কুতুবুদ্দিন ও নুরজাহানের সমাধির মতো ঐতিহাসিক স্থানও রয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং বলেন, জেলায় এতিহাসিক গুরুত্বের অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলি সংস্কারে উদ্যোগ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদেরও পর্যটনে শিল্পে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পে নতুন জোয়ার এনেছে রাজ্য সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগ। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পাহাড়, সমুদ্র, অরণ্য ও ঐতিহাসিক স্থানের আধুনিকীকরণ থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের সংস্কৃতি, হস্তশিল্প এবং লোকসংগীতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন জেলার পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই একটি ভিডিও তৈরি করেছে।রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানিয়েছেন, পর্যটন শুধু অর্থনীতির চাকা ঘোরায় না, এটি স্থানীয় সংস্কৃতি ও পরিচয়কে তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম। তাই আমরা একাধারে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের যুক্ত করে পর্যটনের প্রসারে কাজ করছি।বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে গাইড প্রশিক্ষণ, হোমস্টে উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটনের দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ, সুন্দরবন, দার্জিলিং, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভুম সর্বত্র পর্যটনের নবজাগরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. শিবকালি গুপ্ত জনতার কথাকে জানান, পর্যটনের বিকাশ সরাসরি হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন, হস্তশিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে। এটা যেমন কিছু মানুষের বিনোদন আবার বহু মানুষের জীবিকাতে বিরাট প্রভাব ফেলে। তিনি আরও জানান, আগে প্রত্যন্ত গ্রামে পর্যটক সেভাবে আসত না, এখন বহু বিদেশি পর্যটকও প্রত্যন্ত গ্রামে ভ্রমন করেন। তাঁরা হস্তশিল্প কিনছেন, খাবার খাচ্ছেন। সাথে গ্রামীন অর্থনীতিতে জোয়াড় আনতে সাহায্য করছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের জেলায় পর্যটন অকর্ষনের অভাব নেই, জেলাকে ঘিরে আছে তিন তিনটে নদী (দামদর, ভাগীরথী, অজয়)। বিস্তীর্ন বনাঞ্চল, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, হস্তশিল্প, লোকশিল্প। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শম্ভুনাথ কলেজের ভুগোলের অধ্যাপক ড. কুনাল চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে নানাবিধ প্রকল্প ঘোষনা করছে। রাজ্য সরকার Experience Bengal ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। এতে বিভিন্ন সনামধন্য পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সাথে বহু গ্রামীন পর্যটন কেন্দ্রেও মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তাঁর মতে পর্যটনের বিকাশ সরাসরি হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন, হস্তশিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, এই ধারা বজায় থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলার পর্যটন শিল্প দেশের অন্যতম বড় আয়ের উৎস হয়ে উঠবে।

জুন ২৫, ২০২৫
রাজ্য

পূর্ব বর্ধমানের প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নায় বিভেদ, হিন্দু-মুসলিমদের জন্য় পৃথক ব্যবস্থা

এই বাংলার স্কুলেও যে এমন বিভাজন রয়েছে প্রাথমিক স্কুলে তা জানা ছিল প্রশাসনেরও। প্রাথমিক স্কুলের মিড ডে মিলে হিন্দু, মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য় পৃথক ব্যবস্থা। এখানে মিড-ডে মিলের হেঁসেল,রাঁধুনি ও রান্না করা খাবার। এই ঘটনা জানাজানি হতেই রাজ্যে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নডেচড়ে বসেছে জেলা ও ব্লক প্রশাসন, স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। জেলাশাসক আয়েষা রাণী এই ঘটনা জেনে প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন মহকুমা শাসকের কাছে।পূর্বস্থলীর প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার দুজন আলাদা ধর্মাবলম্বী রাঁধুনি। পূর্বস্থলীর নাদনঘাটে কিশোরীগঞ্জ-মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া সংখ্যা ৭২ জন। শিক্ষক ও শিক্ষিকা মিলিয়ে রয়েছেন চারজন। হিন্দু ও মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়ের পরিবারের ছেলে মেয়েরা এই স্কুলের শ্রেণীকক্ষে একসাথে বসে শিক্ষকের কাছে পাঠ নেয়।স্কলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ চেষ্টা করেও এই ব্য়বস্থা বন্ধ করতে পারেননি। স্কুলের রাঁধুনিদের একজন হিন্দু ,অপর জন মুসলিম । তাঁরাই জানিয়েছেন,বিদ্যালয়ে মড-ডে মিল রান্নার হেঁসেল আলাদা। হিন্দু রাঁধুনি সোনালী মজুমদার আলাদা গ্যাসের উনানে রান্না করনেন হিন্দু পরিবারের পড়ুয়াদের মিড- ডে মিল। আর অপর গ্যাসের উনানে মুসলিম রাঁধুনি গেনো বিবি রান্না করেন মুসলিম পরিবারের পড়ুয়াদের মিড -ডে মিল। শুধু আলাদা আলাদা ভাবে রান্না করাই নয়,হেসেলে দুই সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল রান্নার উপকরণ থেকে শুরু করে বাসনপত্র ,হাঁড়ি-কড়াই,খুন্তি -সেসবও আলাদা আলাদা রয়েছে। এমনকি হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ৪৩ ও ২৯ জন পড়ুয়াকে মিড- ডে মিল খাওয়ানোও হয় আলাদা আলাদা স্থানে বসিয়ে। আজ থেকে ওই স্কুলে একসঙ্গে রান্না ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

জুন ২৫, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

কৌশিক যেন কামিন্দু! আইপিএলে দেখছেন ক্লার্ক

কৌশিক মাইতি যা পারেন তা তিনিও পারেন না। বক্তা অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। ডব্লিউটিসি ফাইনাল বা ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ নয়, ক্লার্ক রয়েছেন ইডেনের কমেন্ট্রি বক্সে। বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগের আসরে। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। আগে তুলে ধরি কৌশিকে ক্লার্কের মুগ্ধতার কথা।কৌশিক মাইতি। দুই হাতেই বল করতে ও ঘোরাতে পারেন। এমনিতে ডানহাতি। তবে বাঁ হাতে ঠিক তেমন বোলিং অ্যাকশন দেখে অভিভূত ক্লার্ক। দোভাষী শ্রীবৎস গোস্বামীকে নিয়ে ক্লার্ক কথা বললেন কৌশিকের সঙ্গে। আরও পরিশ্রমের পরামর্শ দিয়ে বললেন, কৌশিক আইপিএলে খেলবেন। তাঁকে কেউ না নিলে অবাকই হবেন। স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা যে বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগ চালু করেছেন তার সার্থকতার অন্যতম উদাহরণ ক্লার্ক-কৌশিক কথোপকথন। উল্লেখ্য, আইপিএলের ইতিহাসে দু-হাতেই বল করতে পারেন এমন একমাত্র ambidextrous বোলার কামিন্দু মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার এই প্লেয়ার আছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। ক্লার্কের ভবিষ্যদ্বাণী মিললে, কৌশিক ভারতের প্রথম ambidextrous বোলার হিসেবে আইপিএলে জায়গা করে নিতেই পারেন, যার মঞ্চ হবে বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগ।না, ইডেনে ৫০-৬০ হাজার লোক এই লিগ দেখতে আসবেন সেই ভাবনা নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হয়নি। দর্শক সব সময় স্বাগত, ইডেনের দ্বার অবারিত, বিনামূল্যে খেলা দেখার বন্দোবস্ত করেছে সিএবি। কিন্ত স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই লিগ চালু করেছেন বেশ কিছু লক্ষ্য সামনে রেখে। যার প্রথম হলো, বাংলার প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ করে দেওয়া। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের আবহের মধ্যে থেকে।এই লিগকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্টার স্পোর্টস ও ফ্যানকোডে সম্প্রচার। দুর্ধর্ষ কমেন্ট্রি টিম। মাইকেল ক্লার্ক, ঝুলন গোস্বামী, মহম্মদ কাইফ, মন্টি পানেসর, চেতন শর্মা, নিখিল চোপড়া, রোহন গাভাসকর, অশোক মালহোত্রারা রয়েছেন। সঞ্চালিকাদের মধ্যে আছেন ম্যাথু হেডেনের কন্যাও। না, দেশের আর কোথাও টি২০ লিগে এমন তারকাখচিত কমেন্ট্রি টিম নেই। এর আরেকটি কারণ, তারকাদের কাছ থেকে প্রয়োজনে মূল্যবান টিপস নিয়ে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। যে উৎসাহ কৌশিক ক্লার্কের কাছ থেকে পেলেন, তা ইডেনের প্রতিটি আসন ভর্তি থাকলেও হতো না!আইপিএল বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়ম ভাঙলে যেমন শাস্তির বিধান আছে তা আছে বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগেও। ক্রিকেটার বা কোচিং স্টাফদের ম্যাচ সাসপেনশন বা জরিমানা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে না কোন নাম কত বড়। এই লিগে এমন ব্যবস্থাপনায় ক্রিকেটাররা খেলার স্পিরিট, শৃঙ্খলার বিষয়ে সজাগ থাকবেন, যাতে বড় মঞ্চে গিয়ে মানিয়ে নিতে অসুবিধা না হয়। হক আই টেকনোলজি-সহ ডিআরএস রয়েছে। এতে আম্পায়ারিংয়ের মানের উন্নতি হতে বাধ্য, হচ্ছেও। আগেরবারের তুলনায় এবার টুর্নামেন্ট এগোচ্ছে মসৃণভাবে। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে খেলা চালানো যাচ্ছে মাঠ ঢেকে রাখা-সহ সিএবির উন্নতমানের পরিকাঠামোর জন্যেই।কথা হচ্ছিল এই লিগের শুরু থেকে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠের কাজে ২৪x৭ নিয়োজিত সিএবির ট্যুর অ্যান্ড ফিক্সচার ও টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় দাসের সঙ্গে। তিনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করলেন। আইপিএল, ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক ম্যাচ নৈশালোকে হয়। বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগও হচ্ছে নৈশালোকে। এতে সুবিধা ক্রিকেটারদের। কারণ, সিএবির সাদা বলের সব টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ নৈশালোকে করা সম্ভব নয়। এই লিগের খেলা দিনেও হচ্ছে, রাতেও হচ্ছে সমান তালে। ফলে নৈশালোকে খেলার অভিজ্ঞতাও বাড়ছে ক্রিকেটারদের। যা সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট খেলার সময় তাঁদের লাভবানই করবে।

জুন ২৫, ২০২৫
রাজ্য

বেহাল দশা রাস্তার, রাস্তায় ধান রোপন করে অবরোধ ও বিক্ষোভ বিজেপির

বাগদার নাটাবেড়িয়া থেকে নদীয়ার আইসমালি পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা, রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পাঁচপোতাতে রাস্তায় ধান রোপন করে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ বিজেপির। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেপির। যান চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের আশ্বাসে এক ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয় অবরোধকারীরা।উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার নাটাবেড়িয়া ও নদীয়ার রানাঘাটের মধ্যে সংযোগকারী রাজ্য সড়কের আইসমালী পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। রাস্তার মাঝে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যানবাহন চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বেহাল রাস্তার কারণে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন রাস্তা সংস্কার করা হয়নি। সোমবার বিজেপি রাস্তা সংস্কারের দাবিতে নাটাবেরিয়া আইসমালি রাজ্য সড়কের পাঁচপোতাতে রাস্তায় ধান রোপণ করে অবরোধ শুরু করে। অবরোধকারীদের দাবি অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসন সংস্কারের আশ্বাস দিচ্ছে অবরোধ ততক্ষন চলবে। বিজেপি নেতা অমৃতলাল বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার করুণ দশা। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে, বিপদ বাড়ছে সাধারণ পথ চলতি মানুষের। বর্তমান সরকার রাস্তা সংস্কারের কোন সদিচ্ছা দেখাচ্ছেন না। অবিলম্বে এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি, রাস্তা সংস্কার না হলে আগামীতে সমগ্র বাগদার মানুষ এখানে এসে প্রতিবাদ জানাবে।বিজেপির পথ অবরোধ শুরু হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাগদা পুলিশ প্রশাসন। অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে অবরোধ তোলার চেষ্টা করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে বাগদা বিডিওর প্রতিনিধি এসে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিলে এক ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। এই বিষয়ে ভিডিওর প্রতিনিধি হিসেবে আসা প্রশাসনিক কর্তা শুভেন্দু বিশ্বাস বলেন, বিজেপি যে দাবি রেখেছে সেই দাবি ন্যায্য দাবি। আমি বিডিও সাহেবকে ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়টি জানাবো। কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে।

জুন ২৩, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal